বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ২৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮০০, আহত ২৫০০

ডেস্ক রিপোর্ট।।
ডেস্ক রিপোর্ট।।
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:৫৫ পিএম
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮০০, আহত ২৫০০

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানা ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৮০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫০০ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নানগারহার ও কুনার প্রদেশে হতাহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

Article large 1

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে ছিল। মূল ভূমিকম্পের পর আরও অন্তত তিন দফা আফটারশক অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।

Article large 2

রাজধানী কাবুল থেকেও প্রায় কয়েক সেকেন্ড কম্পন টের পাওয়া গেছে, যা কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে এ কম্পন অনুভূত হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত আফগান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, 'দুঃখজনকভাবে, আজ রাতের ভূমিকম্পে আমাদের কয়েকটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।'

Article large 3

তিনি জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা উদ্ধার তৎপরতায় নেমেছেন এবং কেন্দ্রীয় ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলো থেকেও সহায়তা দল ঘটনাস্থলের পথে রয়েছে।

এদিকে ইউএসজিএস জানিয়েছে, মূল ভূমিকম্পের পর একই এলাকায় অন্তত আরও দুটি শক্তিশালী আফটারশক আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে একটি ছিল ৫.২ মাত্রার। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

আফগানিস্তানের কুনার ও নানগারহার প্রদেশের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, গত রাতে প্রথম দফায় ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক দফায় আফটারশকও অনুভব করেছেন তারা।

Article large 4

২৮ বছর বয়সী পোলাদ নুরি জানান, তিনি মধ্যরাতে নানগারহার প্রদেশে নিজের বাড়ির বাইরের রাস্তাতেই দাঁড়িয়েছিলেন আফটারশকের ভয়ে।

তিনি জানান, অন্তত ১৩টি আফটারশক গুনেছেন তিনি এবং শত শত মানুষ ভয়ে ঘর ছেড়ে রাস্তায় চলে এসেছে।

আমার জীবনে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প আমি কখনো দেখিনি, বলছিলেন নুরি। তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

কুনার প্রদেশের পুলিশ প্রধান বিবিসিকে জানান, বন্যা ও ভূমিকম্পের আফটারশকের কারণে ভূমিধ্বস হয়েছে এবং সেসব এলাকায় যাওয়ার সড়কপথ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে উদ্ধারকাজ পরিচালিত হচ্ছে শুধু হেলিকপ্টার ব্যবহার করেই।

ভূতাত্ত্বিকভাবে আফগানিস্তান একটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। দেশটি ইন্ডিয়ান ও ইউরেসিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

Loading...
×