প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ৩:০১ পিএম প্রিন্টের তারিখ: বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
শাম্মী আক্তার

শাম্মী আক্তার

বারিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাদকের অবৈধ পাচার ও অপব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যে কোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ যুবশক্তিই পারে দেশকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যেতে। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদের এই তরুণ সমাজকে মাদক থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে।

দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নানাভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু এবং কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের মন্ত্রণালয় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করে নিয়মিতভাবে সভা, সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজনসহ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

নতুন মাদকের কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগসের আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। নতুন নতুন এসব মাদক নিয়ে আমাদেরকে নতুনভাবে কর্মকৌশল তৈরি করতে হচ্ছে। এসব মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এগুলোকে আইনের তফসিলভুক্ত করার পাশাপাশি কৌশলগত নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন ধরনের মাদক সম্পর্কে দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থা সজাগ রয়েছে এবং এগুলোর বিস্তার রোধে উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে নিয়োজিত রয়েছে ২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্টে নিয়োজিত রয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ১টি বিশেষ জোন, ৮টি বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয় এবং ৮টি বিভাগীয় কার্যালয়ের সহযোগিতায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দেশব্যাপী তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ইদানীং সামাজিক প্রতিরোধ কম দেখছি। সামাজিক প্রতিরোধ বাড়াতে সবাইকে অনুরোধ করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তিনটি স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কাজ করছে। প্রথমটা সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে বিশাল সীমান্ত রয়েছে। আমাদের দেশে মাদক উৎপাদন হয় না। বাইরের দেশ থেকে অন্য লোক এনে আমাদেরকে খাওয়াচ্ছে। আমরা পয়সা দিয়ে কিনে নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৩২টি জেলা সীমান্ত এলাকা। এই জায়গাগুলোতে জনসাধারণের সম্পৃক্তা লাগবে। এই কার্যক্রমের মাত্রা বাড়াতে হবে।

সরকারিভাবে প্র‍্যতেক বিভাগীয় পর্যায়ে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্রের হাসপাতাল করা হবে বলেও উল্লেখ করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।



প্রকাশক : সৈয়দ মাহমুদ মূসা

অফিস এড্রেস :3/1 , Block F , Lalmatia, Dhaka

+8801779338880‬

info@studentbd24.news (সাধারণ তথ্যের জন্য), editor@studentbd24.news (সম্পাদকীয়),

প্রিন্ট করুন